কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উল্লেখ করেছেন, এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কিছু মহল উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলন থেকে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝড়ে গেলো। নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “কোটা আন্দোলনে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। এ ঘটনা কখনো কাম্য নয়। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের ছাদ থেকে নির্মমভাবে ফেলে দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটাও করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, নিহতদের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই, যাতে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আইনের মুখোমুখি করা হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। তারা নিজেদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য এই আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে।” তিনি উল্লেখ করেন, “এই ধরনের কর্মকাণ্ডের পেছনে যে উদ্দেশ্যই থাকুক না কেন, আমরা তা সহ্য করবো না।”
প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্মরণ করে বলেন, “এই আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমরা এই ধরনের সহিংসতা চাই না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সমর্থন করি, কিন্তু সহিংসতা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সজাগ থাকতে হবে যাতে এই ধরনের সহিংসতা আর না ঘটে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।” তিনি বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, “আমরা ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। কোটা ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে আমরা আলোচনায় আছি। এই বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে আমরা সবপক্ষের মতামত গ্রহণ করবো।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবো যাতে তারা কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার না হন। জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে এবং যে কোনো সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরপরই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছে। তারা বলেন, “বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। শান্তিপূর্ণ এবং স্থিতিশীল বাংলাদেশ গঠনে আমরা সর্বদা বাংলাদেশের পাশে আছি।”
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক দিক উন্মোচন করেছে। জনগণ আশা করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
/ s24online