বগুড়ার সান্তাহারে বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে কোটা আন্দোলনকারীরা রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ করে দেন। চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ট্রেনটি আটকে তারা বিক্ষোভ করেন, যা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ।
সকালে সান্তাহার বিপি স্কুল থেকে আন্দোলন শুরু করে, আন্দোলনকারীরা পৌরশহরের সরকারি কলেজ হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী স্লোগান দেন। এরপর রেললাইনের ওপর বসে পড়েন, ফলে ট্রেন চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা মেধার মূল্যায়ন চান। এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা সবাই মেধার মূল্যায়ন চাই। এই মেধার মূল্যায়ন চাইতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের ভাই-বোনরা হামলার শিকার হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন আমাদের কয়েকজন ভাই। আমরা আর কোনো ভাই-বোনদের হারাতে চাই না। আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
আন্দোলনের সময় আদমদীঘি ও সান্তাহার ফাঁড়ি পুলিশ এবং রেলওয়ে থানা পুলিশ ব্যাপক সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে আছি। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। যে কোনো সময় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “ট্রেন বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে। আমরা চাই দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হোক।”
আরও পড়ুন : নওগাঁ মেডিকেল কলেজে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলা: আহত ৪ শিক্ষার্থী
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে এবং শিগগিরই একটি সমাধানে পৌঁছানো হবে। এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি এবং শীঘ্রই একটি সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।”
সামাজিক মাধ্যমেও এ আন্দোলন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে কিছু ব্যবহারকারী ট্রেন বন্ধের মতো আন্দোলন পদ্ধতিকে সমালোচনা করেছেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন যতক্ষণ না তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়। তারা আরো বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো এবং সরকারের সাথে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি।”
বগুড়ার সান্তাহারে রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি প্রতীকী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মেধার মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলনকারীদের এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। তবে, পুলিশের সতর্ক অবস্থান এবং শিক্ষার্থীদের বোঝানোর প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
/ s24online