মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বুধবার (১০ জুলাই) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের প্রকৌশল অনুষদ গ্যালারিতে ১৯তম ‘অ্যাপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড’ রাজশাহী বিভাগীয় বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং তাদের সৃজনশীল ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করা।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকায় ফিল্ম অ্যান্ড কালচারাল আর্কাইভে রাজশাহী অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে তারা জানান, রাজশাহী বিভাগের ১৪-১৮ বছর বয়সী স্কুল-কলেজ পর্যায়ের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। নিবন্ধনের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের ১৮৯ জন প্রতিযোগী ইতোমধ্যে নিবন্ধন করেছে।
রাজশাহী বিভাগীয় বাছাই পর্বে শিক্ষার্থীদের বেলা আড়াইটার মধ্যে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। বাছাই পর্ব থেকে সিনিয়র গ্রুপের ২০ জন ও জুনিয়র গ্রুপের ২০ জন করে মোট ৪০ জনকে নির্বাচিত করা হবে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজন, ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সুমাইয়া খান বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ এবং গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে জানতে চাইতাম। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।”
আরও পড়ুন : মেটা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পোস্ট ব্যবহার করে এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে
প্রাথমিক বাছাই পর্বে উত্তীর্ণদের নিয়ে আগামী ৩ আগস্ট ঢাকায় আয়োজন করা হবে ‘অ্যাপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড’-এর জাতীয় পর্ব। জাতীয় পর্ব থেকে সিনিয়র গ্রুপের ১৫ জন এবং জুনিয়র গ্রুপের ১৫ জনসহ ৩০ জনকে নিয়ে ২১ থেকে ২৪ আগস্ট চার দিনের আবাসিক ক্যাম্প এবং চূড়ান্ত বাছাই পর্ব হবে। এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা ও গবেষণা করতে পারবেন।
চূড়ান্ত বাছাই পর্ব থেকে নির্বাচিত পাঁচজন প্রতিযোগী আসন্ন ২৮তম আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের নির্বাহী সদস্য আননাবা কবীর প্রকৃতি বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো তরুণ প্রজন্মের মাঝে মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করা। এই প্রতিযোগিতা তাদের সৃজনশীলতা ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করবে।”
আঞ্চলিক আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব আতিকুর রহমান আতিক, নির্বাহী সদস্য জাবিদ অপু, মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, রমিজ হাসান প্রতীক প্রমুখ এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, “এই ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে এবং তাদের মানসিক দক্ষতাকে প্রখর করবে।”
রাজশাহী অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াডের এই বাছাই পর্বে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি শিক্ষার্থীই নিজের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নতি করতে পারবে। এই প্রতিযোগিতা তাদের মধ্যে মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করবে এবং তাদের ভবিষ্যতকে আরও আলোকিত করবে।