শিকাগো রাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন একটি বিশেষ ভাষণ দিয়েছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসই ইতিহাস রচনা করবেন। ক্লিনটনের এ বক্তব্য ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি নারী নেতৃত্বের নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা ঘোষণা করছে।
সম্মেলনে হিলারি ক্লিনটনের ভাষণ
সাম্প্রতিক চার দিনব্যাপী ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী রাতে অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন হিলারি ক্লিনটন। তাঁর ভাষণে তিনি বলেন, “২০১৬ সালে আমি যখন ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন জিতেছিলাম, তখন আমি প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে একটি বাধার দেয়াল ভেঙেছিলাম। কিন্তু এবার কমলা হ্যারিসের সময় এসেছে সেই বাধার দেয়াল ভাঙার।” ক্লিনটন তাঁর বক্তব্যে কমলা হ্যারিসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে তার ভূমিকা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমলা হ্যারিসের নতুন পদক্ষেপ
নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে, কমলা হ্যারিস বুধবার (২১ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে তার রানিং মেট হিসেবে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজকে মনোনীত করবেন। এই পদক্ষেপটি নিশ্চিত করেছে যে, হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে, টিম ওয়ালজ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার সঙ্গে কাজ করবেন। এই পদক্ষেপটি ডেমোক্রেটিক পার্টির ঐক্যের এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : শেখ হাসিনা এবং সাবেক মন্ত্রীদের লাল পাসপোর্ট বাতিল
ইতিহাসের নতুন অধ্যায়
হিলারি ক্লিনটনের ভাষণ এবং কমলা হ্যারিসের মনোনয়ন প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ক্লিনটন নিজে যে বাধার দেয়াল ভেঙেছিলেন, তা এখন কমলা হ্যারিসের জন্য নতুন সুযোগের দরজা খুলছে। হ্যারিসের প্রার্থীতা একদিকে যেমন নারীদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের নতুন দিগন্ত খুলবে, তেমনি এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবেশের মৌলিক পরিবর্তনকেও সূচিত করবে।
সমর্থন ও প্রত্যাশা
কমলা হ্যারিসের প্রার্থীতা নিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা অত্যন্ত আশাবাদী। তাদের বিশ্বাস, হ্যারিসের নেতৃত্ব যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এনে দিবে। তার প্রশাসন যদি নির্বাচিত হয়, তবে তা শুধুমাত্র নারীদের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের জন্য এক নতুন ভবিষ্যতের সংকেত হবে।
নির্বাচনী যুদ্ধের প্রস্তুতি
আগামী নির্বাচনী যুদ্ধকে সামনে রেখে ডেমোক্রেটিক পার্টি এখন তাদের শক্তিশালী দলীয় ভিত্তি গড়ে তুলছে। কমলা হ্যারিস এবং টিম ওয়ালজের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী দল গঠনের চেষ্টা চলছে, যা নির্বাচনী প্রচারে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। ক্লিনটনের ভাষণ এবং হ্যারিসের মনোনয়ন এটাই প্রমাণ করে যে, ডেমোক্রেটিক পার্টি একটি শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ দল হিসেবে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হিলারি ক্লিনটনের ভাষণ এবং কমলা হ্যারিসের মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনে দিতে পারে। এটি শুধুমাত্র একটি নতুন নেতৃত্বের সূচনা নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়নের একটি বড় পদক্ষেপও। আগামী নির্বাচনে কিভাবে এই পরিবর্তনগুলি দেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
/ s24online